Monday, August 27, 2018

কবুতরের খাদ্যতালিকা

কবুতরের খাদ্যতালিকা



রেডিমেড মিক্সড খাবারে ময়লা-জীবানু থাকে বলে সহজেই সখের কবুতর রানীক্ষেতসহ নান্রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই এদের সুস্থ-সবল ও নীরোগ রাখতে হলে খাবার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া দরকার।
এজন্য মিক্সড ও রেডিমেড খাবার না কিনে সেসব আইটেম আলাদাআলাদাভাবে কিনে তা ঝেড়ে ময়লামুক্ত করে নিতে হবে। এরপর নিম্নোক্ত অনুপাতে একসাথে মিক্সড করে সুষম খাদ্য বানিয়ে নিতে হবে। গ্রীড ব্যতীত নিচের খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়াতে হবে। গ্রীড আলদাভাবে মাঝেমাঝে খাওয়াতে হবে। এছাড়াও নিম্ন চার্টমতে কিছু ওষুধ ও ভিটামিন দিতে হবেঃ
খাদ্যতালিকাঃ
ক্রমিক আইটেম নাম অনুপাত পরিমান
১ মাছিগম (লালগম) ৪০%
২ ছালসহ রেজা ডাল ২৫-৩০%
৩ পপকর্ণ (ভূট্টা) ৫-১০%
৪ বাজরা লাল/সাদা ৫%
৫ গ্রিনপিচ/ছালসহ মটরডাল ২-৩%
৬ পোলাওচালের ধান ২-৩%
৭ কুসুমবীজ ১%
৮ চীনা কাউন ১৫-২০%
৯ গ্রীড মিক্সড নয় আলদাভাবে মাঝেমাঝে দিতে হবে
ভিটামিন ও ওষুধের মিশ্রণতালিকাঃ ১
(ক)
ক্রমিক ভিটামিনের নাম পরিমান পানির মিশ্রণ ডোজ
১ Vitacin AD3E ২এমএল ১লিটারে পরপর ৩দিন মাসে ২বার ২ Calplex ৩এমএল
৩ Renasel-E ২এমএল
ভিটামিনঃ ২
(খ)
ক্রমিক ভিটামিনের নাম পরিমান পানির মিশ্রণ ডোজ
১ Thiamin RP ২এমএল ১লিটার পরপর ৩দিন মাসে ১বার ২ Hiprochak Amino ২এমএল
এন্টিবায়োটিক ও ভিটামিনঃ ৩
(গ)
ক্রমিক ওষুধের
নাম পরিমান পানির মিশ্রণ ডোজ
১ Fymoxil DS Powder ২এমএল ১লিটার পরপর ৩দিন মাসে ১বার ২ Flagyl Syrup ২এমএল
৩ Ceevit Tablet ১টা
৪ Homoeo Beptacia 30 (জার্মান) ১০ফোটা
কৃমিনাশক বড়িঃ ৪
(ঘ)
ক্রমিক ওষুধের
নাম পরিমান খাওয়াতে হবে ডোজ
১ কৃমিনাশক ট্যাবলেট ১/৮ ১লিটার ৭ দিন পরপর ২দিন প্রতি ৩মাস পর
এছাড়া রানীক্ষেত রোগ ঠেকাতে কবুতরকে নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবে। সরকারি পশুহাসপাতালে কমদামে RDB Vaccine পাওয়া যায়, যা একবার দিলে তিনমাস পর্যন্ত কার্যকারিতা থাকে। এ ভ্যাকসিন কবুতরের বুকের মাংসে ডায়াবেটিস সিরিঞ্জ দিয়ে পুস করতে হবে।
সুস্থ-নিরোগ কবুতরপালনের জন্য উপর্যুক্ত ওষুধ ও ভিটামিন দেয়ার পাশাপাশি পানির বাটি সকালে দেয়ার পর বিকালে তা বদলিয়ে আরেকসেট করে বাটি দিতে হবে যাতে বাটিতে ফাঙ্গাস তৈরি হতে না পারে। বদলানো বাটি জীবানুনাশক দিয়ে ধুয়ে উপড় করে শুকিয়ে নিতে হবে বিকেলে আরেকবার বদলিয়ে ব্যবহারের জন্য। একজড়া কবুতরের জন্য তাই ২জোড়া পানির বাটি থাকা দরকার। আর খাবার ও পানির বাটি খাঁচার ভেতরের বদলে বাইরেই দেয়া অধিক স্বাস্থ্যসম্মত; যেহেতু ভেতরে দিলে বাটিতে মল-মূত্র করতে পারে।

Saturday, August 25, 2018

কবুতরের ক্যাঙ্কার বা ট্রাইকোমোনিয়াসিস রোগ

কবুতরের ক্যাঙ্কার বা ট্রাইকোমোনিয়াসিস রোগ


কেমন আছেন সবাই, আজ কবুতরের একটা খুব common রোগ নিয়ে আলোচনা করবো। কবুতরের রোগ নিয়ে আলোচনার একটা কারন বলতে চাই, ভেটসবিডিতে দেখছি কবুতরের নিয়ে লেখা আর্টিকেল সবচেয়ে বেশিবার পড়া হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসে কবুতরের ব্যাপারেই। আমার স্যার কাজী আশরাফুল ইসলাম, যিনি
সৌখিন কবুতরের উপর একটা আর্টিকেল লিখেছিলেন, ওনার কাছেও তাই। ঢাকা থেকে তো এক ভদ্রলোক অফিসেই চলে আসলেন কবুতর কিনতে। তাই ভাবলাম এবার একটু এদিকে নজর দেয়া যাক, তাই এই আর্টিকেল। অভিজ্ঞজনেরা ভুল হলে ধরিয়ে দেবার অনুরোধ রইলো। চলুন শুরু করি-
ভূমিকাঃ
এই রোগটি Trichomonas columbae এবং
Trichomonas gallinae নামক এক প্রকার প্রোটোজোয়া দ্বারা হয়ে থাকে যার নাম canker বা Trichomoniasis । এটা একটা microscopic single-celled organism যা কবুতরের digestive tract –এ বাস করে, বিশেষতঃ throat and crop, এমনকি bile duct-এও থাকতে পারে। পরিবেশে এই জীবানুটি খুবই fragile এবং পাখির দেহের বাইরে কয়েক মিনিট মাত্র বেঁচে থাকতে পারে। আর এটাই রোগটিকে কন্ট্রোল করাতে সাহায্য করেছে এবং আরো একটি সুবিধা হলো যে এর ফলে কবুতরের ঘর থেকে বা আশপাশের পরিবেশ থেকে এ রোগটি সহযে অন্য কবুতরে সংক্রমিত হতে পারে না, যেমনটা হয় কৃমি বা প্যারাটাইফয়েডের ক্ষেত্রে।
কিভাবে ছড়ায়ঃ
জীবানুটি (trichomonad) ছড়ানোর জন্য দুটি কবুতরের মধ্যে একটা intimate contact বা নিবিড় সম্পর্ক থাকতে হবে। সাধারনত লালা বা pigeon milk এর মাধ্যমে এ জীবানুটি ছড়িয়ে থাকে। লালার মাধ্যমে খাবার এবং পানি দুষিত হয়ে পড়ে এবং যখন একটি কবুতর পানি খায় তখন জীবানু মুখ থেকে সাতরিয়ে পানিতে চলে আসে। এরপর যখন আরেকটি কবুতর সেই পানি পান করে তখন সে শুধু পানিই পান করে না তার সাথে জীবানুও ঐ পানির সাথে খেয়ে ফেলে। আবার যখন আক্রান্ত কবুতর শষ্যের দানা বেছে বেছে খায় তখন তার মুখ থেকে যে শষ্যদানাগুলো পড়ে যায় তার প্রত্যেকটির সাথেই অল্প পরিমানে লালা মিশ্রিত হয়ে যায়। এভাবেই খাদ্যের পাত্রেও জীবানু ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক কবুতর থেকে বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময়ও জীবানু বাচ্চার দেহে চলে যায়। তবে এ থেকে রোগ ছড়ানোর পরিবর্তে অনেক সময় বাচ্চাতে এর বিরুদ্ধে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও উৎপন্ন হয়ে থাকে কেননা, feeding এর মাধ্যমে অল্প পরিমান জীবানুই বাচ্চার দেহে প্রবেশ করে যা বরং immunity development-এই বেশি সাহায্য করে। আরেকটি কথা, দেখা গেছে, কবুতর কোন কারনে ধকলে পড়লে এই রোগ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই যদি সেরকম কোন সম্ভাবনা তৈরি হয় তবে আগে থেকেই treatment নেয়া ভালো বলে অনেকেই মনে করেন।
লক্ষণঃ
Repeated swallowing movements can be a sign of canker. I usually notice this after the birds land on the loft, after the training
yellow stuff in the throat and beak of the bird
ruffled plumage
apathy of the bird
weight loss and weakness
increased water intake – this also produces the so called “wet nests” when the parents having canker pump a lot of water in the nestlings
the birds are reluctant to fly
রোগটির কিছু form –
Pharyngeal Form: এটাই সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। খামারিগণ সাধারনত তাদের কবুতরের গলায় হলুদ বর্ণের একটা বস্তু দেখতে পান। এটা অনেক সময় এতোই বড় হয় যে তা অনেক সময় খাবার গ্রহণ এমনকি শ্বাস নিতেও বাধা সৃষ্টি করে।
Umbilical canker: সাধারনত সংক্রমিত ঘর থেকে সদ্যজাত বাচ্চাতে এই প্রকারের canker দেখা যায়।
Organ Form : খুব তীব্র রোগে canker দেহের আভ্যন্তরিন অঙ্গ-প্রতঙ্গকে আত্রান্ত করে। প্রায়শই দেখা যায় লিভারে। উদাসিনতা, উসকো-খুসকো পালক, ডায়রিয়া এসব লক্ষণ দেখা যেতে পারে। লিভার অকার্যকর হয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কবুতরগুলো মারা যায়।
চিকিৎসাঃ
Metronidazole এ রোগের বিরুদ্ধে বেশ ভালো কাজ করে। ২০০ মিলি গ্রাম-এর একটি ট্যাবলেট প্রাপ্ত বয়স্ক কবুতরের জন্য চার ভাগের একভাগ করে দিনে একবার করে খাওয়ালেই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। আবার সিরাপও ব্যবহার করা যায়। ১০ মিঃলিঃ করে প্র্রতিদিনের খাবার পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। তবে এক্ষেত্রে অসুবিধা হলো পানির স্বাদ নষ্ট হয়ে যায় বলে অনেক সময় পাখি ওষুধ মেশানো পানি খেতে চায় না। ঔষধের পরিমান বেশি হলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে সর্ব অবস্থায় অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবহার করবেন।
কবুতরের টিকাদান সূচী-

কবুতরের টিকাদান সূচী-

খামারে রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় | কবুতরের বিভিন্ন রোগ হয় তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রাণীক্ষেত ও পক্স | এ দুটি রোগে কবতর প্রায়ই আক্রান্ত হয় | রাণীক্ষেত রোগে আক্রান্ত কবুতর বেশিরভাগই মারা যায় | এ রোগের কোনো চিকিৎসা নাই | “Prevention is better than cure.” প্রবাদটি এ রোগের বেলায় ১০০ ভাগ খাঁটি | প্রত্যেক কবুতর পালনকারী ভাইদেরকে এ দুটি রোগের টিকা দিতে হবে |
টিকাসূচীঃ
রাণীক্ষেত রোগের জন্যঃ
১. বিসিআরডিভি– ১-৭ দিন ও ২২-২৮ দিন বয়সে বুস্টার ডোজ ১ ফোঁটা ১ চোখে ৬ মিলি পানিতে গুলিয়ে ১০০ কবুতরে
২. আরডিভি — ২ মাস ও তদুর্ধ্ব ১ মিলি রানের মাংসে ১০০ মিলি পানিতে গুলিয়ে ১০০ কবুতরে
পিজিয়ন পক্স — ৩-৭ দিন পাখার ত্রিকোণাকৃতি মাংসবিহীন চামড়া খূঁচিয়ে ৩ মিলি পানিতে ২০০ কবুতরে
বিঃদ্রঃ টিকা দেয়ার পুর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের পরামর্শ নিন |
শেয়ার করুন

Thursday, August 23, 2018

শীতে কবুতর বিভিন্ন সমস্যা

শীতে কবুতর বিভিন্ন সমস্যা

শীতে কবুতর বিভিন্ন সমস্যা
তে ভুগে থাকে, এরমধ্যে অন্যতম যেমনঃ
১) ডাইরিয়া,
২) চোখ ওঠা,
৩) পা অবস বা পেরালাইসিস,
৪) কারন ছাড়া ঝিমানো,
৫) সর্দি-কাশিতে ঘরঘর করা, মুখ হা করে শ্বাস নেয়া ইত্যাদি।
তবে এসব সমস্যায় ভয় পাবার কিছু নেই।
১) খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার কবুতরের খাদ্যে পরিমানমতো তৈলবীজ থাকে,যেমনঃ বাজরা, তিসি, সরিষা, কুসুমবীজ, সূর্যমুখী বিচি ইত্যাদি।
২) খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার খামার স্যাঁতস্যাঁতে নয় শুকনো থাকে। আর এজন্য আপনাকে প্রয়োজন হলে বরিকপাউডার ছিটাতে হবে; আর সম্ভব হলে ছোট একটুকরা কাপড়, পেপার, বা চট মাটিতে বিছিয়ে দিতে পারেন।
৩) নিয়মিত ক্যালসিয়াম দিতে হবে, সাথে ভিটামিন ‘ই’ দিন, কারণ ভিটামিন ‘ই’ যোগ না করলে ক্যালসিয়াম বেশিমাত্রায় শোষিত হবে না কবুতরের শরীরে। মাসে ৩-৪ দিন দিতে হবে, যদি গরম বেড়ে যায় তবে এর মাত্রা কমিয়ে দিন।
৪) মাসে ২/৩ দিন আলাদাভাবে রসুন বাঁটা ১ লিটার পানিতে ২ চা চামচ মিক্স করে ছেকে সাধারন পানির মতো সরবরাহ করে দিন। এতে আপনার কবুতর সাল্মনিল্লামুক্ত থাকবে ও শরীরও উষ্ণ থাকবে।
৫) যদি কৃমির ঔষধ খাওয়ানো থাকে তাহলে মধু যোগ করতে পারেন এর সাথে।
৬) ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স দিন ৩-৪ দিন মাসে ও মাল্টি ভিটামিন দিন ৩-৪ দিন মাসে.
৭) Calceria Curb 30 , ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে দিতে হবে মাসে ১ বার। (রোগপ্রতিরোধ ও সর্দিকাশির জন্য)
৮) আক্রান্তক্ষেত্রে সর্দিকাশির জন্য Dulkamara 30, ৩ ফোটা করে অল্প একটু পানির সাথে করে দিতে হবে দিনে ৩/৪ বার। আক্রান্তক্ষেত্রে যদি সর্দিকাশির সাথে শরীর হালকা গরম
থাকে, হা করে নিঃশ্বাস নেয়, তাহলে Rush Tox 30, ৩ ফোটা করে অল্প একটু পানির সাথে করে দিতে হবে দিনে ৩-৪ বার। আর নিয়মিত স্যালাইন দিবেন।
৯) চোখে সমস্যার জন্য-
যেমনঃ চোখে পেচুটি কাটা, চোখবন্ধ হয়ে যাওয়া, পানিপড়া ইত্যাদি কারনে cipro a or dexcholore eye drop দিতে হবে দিনে ৫-৬ বার।এছাড়াও Pulsetila 200, ৩ ফোটা করে অল্প একটু
পানির সাথে করে দিতে হবে দিনে ২-৩ বার (যদি পুজ জমে ও চোখ বন্ধ হয়ে যায় তবে।) অথবা Merecurius Sol 30, ৩ ফোটা করে অল্প একটু পানির সাথে করে দিতে হবে দিনে ২ বার। ২-৪ দিন দিতে হবে। (যদি পানি পড়ে ও ফুলে থাকে)।
১০) সর্দিকাশি, ডাইরিয়া ইত্যাদি ভাইরাস সংক্রামণ থেকে হয়, তাই অ্যান্টিবায়টিক কোন কাজে আসে না।
১১) কবুতরের জমানো খাবার ও গ্রিটে কোন মতেই যেন না ভেজে বা ফাঙ্গাস না ধরে, তাই অতিরিক্ত সাবধানতা হিসাবে হালকা গরম করে নিতে পারেন।
যদি আপনি আপনার খামারের সঠিক যত্ন নেন আশাকরি এই শীত অনায়াসে নিশ্চিন্তে পার করতে পারবেন।

শেয়ার করুন
কবুতর তার নেশা

কবুতর তার নেশা

আপাদমস্তক একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। নেশা তার কবুতর পালন। কিন্তু এই নেশাই পরে তার ধ্যান-জ্ঞান! নেশা থেকেই পেশায় পরিণত হয়েছে কবুতর পালন। তিনি হলেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার নাদামপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ।
আপাদমস্তক একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। নেশা তার কবুতর পালন। কিন্তু এই নেশাই পরে তার ধ্যান-জ্ঞান! নেশা থেকেই পেশায় পরিণত হয়েছে কবুতর পালন। তিনি হলেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার নাদামপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ।
নবীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে তার গ্রামের বাড়ি ৮০ কিলোমিটার দূরে। নিজ বাড়িতেই পালন করছেন বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর।
সম্প্রতি নবীগঞ্জে তার গ্রামের বাড়িতে আলাপচারিতায় এসব তথ্য বেড়িয়ে আসে।
গ্রামে থেকেও কবুতর পালনের অত্যাধুনিক তথ্য, নতুন জাতের কবুতরের খবর, চিকিৎসা, কবুতর কেনা-বেচার তথ্য তার হাতের মুঠোয়। হ্যাঁ, ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহুর্তেই তিনি জানতে পারছেন কবুতরের বিষয়ে নিত্য-নতুন তথ্য।
কথার মাঝে সামাদ তার মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখালেন সদ্য উদ্ভাবিত নতুন জাতের কবুতর ‘নিকভারী’। তিনি বললেন, কবুতরের যে কোনো সমস্যার সমাধান ফেসবুকের মতো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে পেয়ে থাকি।
সামাদ বলেন, কম খরচে পালন করা যায় এমন সৌখিন পাখিটি হলো কবুতর। যার অসুখ-বিসুখও কম। ফলে মারাও যায় কম। এক জোড়া কবুতর থেকেই বাচ্চা উৎপাদন করে কয়েক লাখ টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানালেন ইঞ্জিনিয়ার সামাদ। কবুতর বিক্রি করে তিনি স্বাবলম্বী বলেও জানান নিতে নিজেই।
Image
তিনি বলেন, শুধু আমি নই, ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, যশোরেও কিছু কবুতরপ্রেমী রয়েছেন। তারাও কবুতর পালন করে প্রতি মাসে ৪-৫ লাখ টাকা আয় করেন। তারা উন্নত জাতের কবুতর পালন করেন।
আলাপচারিতায় জানা গেলো, বাড়ির ছাদে কিংবা আঙ্গিনায় ছোট্ট পরিসরেই কবুতর পোষা যায়।
তিনি বলেন, কবুতর আগেকার দিনে শখে কবুতর পালন করতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে শুধু সৌখিনতাই নয়, ভাল আয়ের একটি পথ। শুধু কবুতর পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছে এমন উদাহরণ আমাদের দেশেই অনেক রয়েছেন।
আব্দুস সামাদের বাড়ির খামারটি ঘুরে দেখা গেল, কবুতরের নামগুলোও বেশ মজার এবং দেখতে খুবই সুন্দর। লোমশ কেশর এবং ছোট্ট মুখের কবুতরটির নাম জ্যাকোবিন। গলা থেকে ঘাড় পর্যন্ত পালকগুলো উল্টিয়ে এমন ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে থাকে যেন কেউ তার মুখ দেখে না ফেলে। আবার গলায় বিশাল আকৃতির বলের মতো ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কবুতরগুলো দেখে মনে হবে পাড়ার কোনো মস্তান দাঁড়িয়ে আছে। এর নাম ‘ম্যাগপাই পোর্টার’। পেখম মেলা কবুতর দেখে মনে হবে ছোট্ট সাদা ময়ুর নেচে বেড়াচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কবুতর এটি। নাম লক্ষা। মজার বিষয় হচ্ছে, এসব কবুতর আমাদের দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে বেশ ভালো ভাবেই মানিয়ে চলতে পারে। কবুতরপ্রেমীরা এসব কবুতরকে ফেন্সি কবুতর নামেই চেনে।
এদের লালন-পালন করতে খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন পড়ে না। মজার বিষয় হচ্ছে এরা আকাশে ওড়ার প্রয়োজন বোধ করে না। খাঁচায় থাকতেই বেশি পছন্দ করে।
কবুতরের খাবার খরচ সম্পর্কে আরো জানা গেল, কবুতরের খাবার হছে গম, চাউল, কাউন, ধান, খুদ, সরিষা ইত্যাদি। মুরগির জন্য তৈরি খাবারও কবুতর খায়। খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমান বিশুদ্ধ পানি দিতে হবে। ২ বাই ২ ফুট স্থানের মধ্যে দুটি কবুতর থাকতে পারে। কবুতরের বাসস্থান কুকুর, বিড়াল, বেজী ইত্যাদি প্রাণী থেকে দূরে রাখতে হবে। কবুতরের ঘরে যাতে পানি না আসে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
Image
কবুতরের দর-দাম সম্পর্কে আব্দস সামাদ এ প্রতিবেদককে জানালেন, জাত ভেদে এদের এক এক জোড়া কবুতরের বাচ্চার দাম ১ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এছাড়া বড় আঁকারের কবুতর কিং জাত বিক্রি হয় ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায়, রিভার্স সুইং ইয়োলো পটার্স জাত বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায়, পমেরেনিয়ান জাত বিক্রি হয় ৮০ থেকে এক লাখ টাকা, ময়ুরী জাত ২ থেকে ৩ হাজার টাকায়, সিরাজী জাত ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়, শাটিং জাত ২ হাজার টাকা জোড়া বিক্রি হচ্ছে।
এটা মানুষের নেশা, পেশা, সখ ও সময় কাটানোর অন্যতম মাধ্যম হিসেবে আজ পরিচিত। কবুতর প্রেমীদের সেই নেশা, পেশা ও ভাললাগার আরও একধাপ এগিয়ে নিয়েছে সৌখিন কবুতর, এই সৌখিন কবুতর যে কত সুন্দর হতে পারে না দেখলে বিশ্বাস করা যাই না। আজ স্কুলের একজন ছাত্র থেকে শুরু করে অফিস আদালতে কর্মরত, সব উচ্চপদের মানুষ আজ এই কবুতর পালনকে শখ, নেশা যেটাই বলা হোক না কেন। আজ সবারই ভাললাগা ও ভালবাসার পাখিতে পরিণত হয়েছে এই কবুতর পালন।
আজ সৌখিন কবুতর পালন শুধু সখ বা নেশা না। এটা অনেক বড় পেশাতেও পরিণত হয়েছে। আজকাল অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকরা এই পেশায় নিজেদের কাজে লাগাচ্ছে।
কবুতরপ্রেমীদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন জানতে চাইলে তিনি জানান, কবুতর প্রেমীদের মধ্যে সর্ম্পকটা অনেক বড়। নিজেদের মধ্যে নিজেরা সমাদর করে
ভাইয়ের মতো।
আব্দুস সামাদ কবুতরের জাত সম্পর্কে জানালেন, মাংস উৎপাদনের জন্য সিলভারকিং, হামকাচ্চা, ডাউকা, কাউরা, গোলা, গোলী, পক্কা, লক্ষা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। চিত্তবিনোদনের জন্য ময়ুরপঙ্খী, সিরাজী, লাহোরী, ফ্যানটেইল, জেকোডিন, মুক, গিরিবাজ, টেম্পলারলোটন-এসব জাতের কবুতর রয়েছে।
এছাড়াও আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য কবুতরের একটি জাত হচ্ছে ‘জালালী কবুতর’। এ নামটি হজরত শাহ্জালাল (রহ.) এর পূণ্য স্মৃতির সঙ্গে জড়িত।
এছাড়াও জেকোবিন, রিহভার্স সুইং ইয়োলো পটার্স, পমেরেনিয়ান, কিংসব বিভিন্ন জাতের কবুতর তিনি পোষেন।
Image
তিনি বলেন, ৭ম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে কবুতর পোষার নেশাটা মাথায় চাপে। প্রায় ১৫ বছর ধরে কবুতর পালন করছি। লেখাপড়ার ক্ষতি হবে ভেবে প্রথমের দিকে পরিবার থেকে কবুতর পালনে বারণ করতো। কিন্তু আমি প্রমাণ করেছি পড়ালেখা কিংবা চাকুরি করেও কবুতর লালন করা যায়।
সিলেটে পড়ালেখার পাশাপাশি চাকরি সবই সামলে রাখতেন অত্যন্ত দক্ষ হাতে। গ্রীণলাইন ট্রাভেলস্, কম্পিউটার সোর্সসহ দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে আইটি বিভাগে কাজও করেছেন সামাদ।
কবুতর সংগ্রহ করতে গিয়ে কড়াকড়ি অবরোধ, রেল দুঘর্টনাসহ বিভিন্ন ঘটনা আর অভিজ্ঞতার ঝুলিও কিন্তু সমৃদ্ধ আব্দুস সামাদের। রেল দুঘর্টনার মুখেও পতিত হন তিনি। ঢাকা থেকে এক জোড়া কবুতর সংগ্রহ করে ফেরার পথে উপবন এক্সপ্রেক্স লাইনচ্যুত হয়। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান তিনি।
স্কুলের সাবেক সহপাঠী শাহেন শাহ লিমন তার সতীর্থ সম্পর্কে বললেন, ছোট থেকেই কবুতর পালনে তার নেশার কথা জানতাম। কিন্তু সেই কবুতর পালনে আজকের এই অবস্থা আমরা কল্পনাও করিনি।
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নাদামপুর গ্রামের নিবাসী মরহুম আব্দুল্লাহ মিয়া ও হাজেরা বেগমের সন্তান তিনি। চার ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে আব্দুস সামাদ সবার ছোট। এসএসসি পরীক্ষার সময় পিতা মারা যায়।
সম্প্রতি সিলেটের মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ থেকে বিএসসি (সম্মান) সম্পন্ন করেছেন।
কবুতর পরিচিতি (২): জালালি কবুতর

কবুতর পরিচিতি (২): জালালি কবুতর

কবুতর পরিচিতি (২): জালালি কবুতর
-------------------------------------------------------------
আপনাদের কি মনে আছে আমরা প্রথমে কি কবুতর নিয়ে কথা বলেছিলাম? হ্যাঁ, আমরা আগের পর্বে জেনেছিলাম দেশী/গোলা/গোবিন্দ কবুতর সম্পর্কে। আজ আমরা যে কবুতর সম্পর্কে জানব তাঁর নাম হল জালালি কবুতর। এটিই বোধহয় একমাত্র কবুতর যার সাথে একটি সুন্দর ইতিহাস জড়িত আছে। তো সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক ইতিহাসটা… আমরা সবাই জানি সিলেটের বিখ্যাত সুফি দরবেশ শাহ্ জালালের (রাঃ) কথা। তাঁর পুরো নাম শায়খ শাহ জালাল কুনিয়াত মুজাররদ। তাঁর সম্পর্কে ছোট্ট আরও একটি তথ্য দিয়ে রাখি, তাঁর জন্মভূমি ইয়েমেনে যা আমরা অনেকেই জানিনা। যাইহোক, ১৩০৩ সালে (৭০৩ হিজরী) ৩২ বছর বয়সে তিনি সিলেটে আসার পথে দিল্লীর আউলিয়া নিজামুদ্দীনের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। সাক্ষাতের বিদায়কালে প্রীতির নিদর্শন স্বরূপ নিজামুদ্দীন হজরত শাহ্ জালাল (রাঃ) কে এক জোড়া সুরমা রঙের কবুতর উপহার দিয়েছিলেন। এই কবুতর নিয়েই তিনি সিলেটে এসেছিলেন। সেই থেকে সিলেটে এই কবুতরের ব্যাপকতা দেখা যায় এবং এর নাম হয় “জালালি কবুতর”।
জালালি কবুতরও আসলে এক ধরণের দেশী কবুতর। এই কবুতরের বৈশিষ্ট্য আর কি বলব! এর সকল বৈশিষ্ট্য ও দাম দেশী কবুতরের মতোই তবে এর বিশেষত্ব হল এর গায়ের রঙ। ধূসর বর্ণের দেহে পালকের উপর উভয় পাশে ২টো কালো রেখা আছে এদের। একই ধরণের অনেকটা লালচে বর্ণের এক ধরণের কবুতর দেখা যায়, সেগুলোকে জালালি কবুতর বলা হয়না। জালালি কবুতর দেখতে ভারি সুন্দর লাগে। অনেকে শাহ্ জালাল (রাঃ) এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জালালি কবুতরের মাংস খান না। এই কবুতর সকল কবুতরের হাটে/দোকানে পাওয়া যায়। আমাদের যাদের বাসায় কবুতর আছে, আমরা একজোড়া হলেও জালালি কবুতর রাখব, কেমন?
আজ তাহলে এই পর্যন্তই। পরের পর্বে আমরা ভিন্ন কোন কবুতর নিয়ে হাজির হব। বলতে ভাল লাগেনা তবুও বলি… আপনারা আমাদের স্ট্যাটাস লাইক ও শেয়ার করেন প্লীজজজজজ, এই টুকু কাজ করতে খুব বেশি কষ্ট হওয়ার কথা না! আর অন্য পেইজের এডমিন ভাইয়েরা শোনেন, আমাদের স্ট্যাটাস কপি করতে পারেন তবে দয়া করে আমাদের পেইজ লিঙ্কটা দিয়ে আমাদের সহায়তা করবেন। নিজেকে নিরাপদে রাখবেন। ধন্যবাদ।
pigeon In Dhaka Bangladesh

pigeon In Dhaka Bangladesh

Who would pay one lakh taka for a pair of exotic and rare pigeons? You may find it unbelievable, but there are some pigeon lovers who would pay even more if they find something they have been looking for.
And because of these pigeon lovers, Dhaka has three dedicated pigeon markets in Tongi, Mohammadpur Beri Badh and Kaptan Bazar. The one in Kaptan Bazar is the biggest among them. Then of course, there are independent pet shops other than the market in Kanta Bon.
“The pleasure of keeping pigeons is that you take one to Mirpur, release it and you will find it back home in Wari after a while,” says businessman and pigeon lover Kazi Moniruzzaman who lives in Wari along with 200 pigeons.
Moniruzzaman and his next door friend Shahnewaz Mia enjoy occasional races between their pigeons and those of other pigeon lovers. There is even a pigeon lovers' association in the old town.
Shahnewaz who has some 450 pigeons on his rooftop farm said his birds had flown back from as far as Teknaf.
The two friends share wisdom you won't usually get to hear: female pigeons are stronger and it is difficult to catch them. That's why female pigeons are costlier.
Out of the world's 310 kinds of pigeons, Bangladeshi markets sell around a couple of dozen varieties. Rock pigeon is considered to be the world's oldest domesticated bird.
The Kaptan Bazar pigeon market brings together thousands of buyers and sellers every Friday. If you go there, you will be surprised that they don't just sell food, nests and pigeons, but also accessories like “jhumka” for pigeons so that they make rhythmic sounds when they walk.
Jonny, a vendor, said he sells pigeons at prices from Tk 200 up to Tk 5,000 depending on the breed.
The price of a pigeon depends on the species and its colour. Fancy pigeons have high demand now and their prices can go up to Tk 10,000 to 15,000, he added.
A few years back, fancy pigeons were even costlier.
“The pigeon we sold for Tk 60,000-70,000 two to three years back now sells at only Tk 15,000,” said another vendor Abdul Bari.
A large number of pigeons were exported to the Indian market at the time, but that demand has fallen, he said.
Besides, pigeon breeding has become very popular in the country, resulting in an increase in production, and fall of prices.
The most common and cheapest breed in Bangladesh is Gola. Other breeds that are very popular include Chila, Lalchila, Giribaz, Garra, Fency, Pankhi and Racer.

কিভাবে নর ও মাদি কবুতর চিনবেন ?

কিভাবে নর ও মাদি কবুতর চিনবেন ?

কিভাবে নর ও মাদি কবুতর চিনবেন ?
-------------------------------------------------------------

সোহেল রাবি ভাই
আমার এক পরিচিত আমাকে একদিন জানালেন যে তার একজোড়া কবুতর ৪ টা ডিম দিয়েছে এবং তিনি নিশ্চিত করে বললেন যে এটা নর আর মাদি, আমি তাকে বুঝানর পরও তিনি তর্ক করলেন, আমি আর কিছু বললাম না, কিছুদিন পর তিনি বুঝতে পারলেন যে আসলে দুটাই মাদি। আসলে এটা উনার কোন দোষ নাই । আবার অনেক ক্ষেত্রে যখন বেশি মারামারি করে তখন বুঝা যাই যে দুটি নর। কারন অনেক ক্ষেত্রেই এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়। সৌখিন কবুতরের ক্ষেত্রে এটা খুবই কঠিন নর ও মাদি আলাদা করা এবং অনেক অভিজ্ঞ সদস্যদেরও অনেক সময় বোকা হয়ে যান আর এটা সবসময় সহজ নয়। আর সেটা যদি বাচ্চা হয় তাহলে ত কথাই নাই, কাজটি তখন কঠিনতর হয়ে যায়। আজ পর্যন্ত যদিও এ ব্যাপারে কোন সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়া হয় নি, ফলে অনেক কিছুই প্রাইয় অজানাই রয়ে গেছে। অনেক সময় দুইটা মাদি ঠিক নর মাদির মতই বৈশিষ্ট্য স্বভাব দেখা গেলেও অনেক পরে বুঝা যাই যে আসলে দুটাই মাদি, কিন্তু এর মাজে অনেক মূল্যবান সময় পার হয়ে যায়। আসুন আজ আমি আপনাদের জন্য কিছু তথ্য দিয়ে সাহায্যকারী হতে পারি কিনা।
পুরুষ ও মেয়ে কবুতরের কিছু শারীরিক ও স্বভাবগত কিছু বৈশিষ্ট্য ও পার্থক্য আছে সেগুলো হলঃ
ক) শারীরিক বৈশিষ্ট্যঃ
১) অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরুষ কবুতর আকারে বড় হয় বিশেষ করে তার মাথা ও চ্যাপ্টা হয়।
মেয়ে কবুতরের শরীর তুলনামূলক ছোট, বিশেষ করে তার মাথা ছোট ও লম্বা হয়।
২) চোখ একটি মুরগি এর হিসাবে বৃত্তাকার হয় না কিন্তু মেয়ে কবুতরের বৃত্তাকার হয়।
৩) পুরুষ কবুতরের পা ও এর আঙ্গুল সমান ও মসৃণ হয় না, কিন্তু মেয়ে কবুতরের পা অর এর আঙ্গুল প্রায় সমান ও মসৃণ হয়।
৪) উভয় হাতে কবুতর ধরুন (মধ্য লাইন থেকে বুক বরারর নিচে হাত চালায় তাহলে হাড় শেষে একটি স্পেস আছে, তারপর বরাবর একটি আঙ্গুল দিয়ে দেখলে 2 ছোট পাতলা হাড় পাবেন “v” এর মত, তারা একসঙ্গে আসা যেখানে মধ্যে একটি ছোট আঙুল বা তার বেশি ফিট করতে পারে, তাহলে এটি মেয়ে কবুতর যেখানে ডিম পাস হয়। আর যদি ১ বা -২ মিলি ফাক থাকে তাহলে পুরুষ কবুতর। অনেকে পুরুষ বা মাদি পরীক্ষা করার জন্য আঙ্গুল পায়খানার পথে দেন, কিন্তু বিশেষ ভাবে খেয়েল রাখবেন কখনও এটা করবেন না।এতে জরায়ু বা ভিতরে সংক্রমণ হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।)
৫) পুরুষ কবুতরের মাথা / ঘার ও দেহ একটু মতা একটু লম্বা ও ঘন ও সবল হয়। আর সাধারণত মাদীর মাথা / ঘার ও দেহ কাছাকাছি আরো মেয়েলি বা সূক্ষ্ম হয়।
৬) হ্যাচিং পরে ১ থেকে ৩ দিন পর যদি আপনি কবুতরের বাচ্চাকে অধিষ্ঠিত করে এর পায়খানা নির্গমনের(vent hole) পথের দিকে খেয়াল করেন তাহলে পুরুষ কবুতরের একটু চ্যাপ্টা বা smile এর মত দেখবেন আর মেয়ে কবুতরের সোজা বা গোল দেখবেন।
৭) পুরুষ কবুতরের গলার রগ মোটা হয় আর মেয়ে কবুতরের তুলনা মূলক ভাবে একটু পাতলা।
৮) পুরুষ কবুতরের ঠোঁট ধরে হালকা করে টান দিলে শে ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করে, আর মেয়ে কবুতর সাধারণত চুপ করে থাকে বা কোন চেষ্টা করে না।
খ) স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যঃ
৯) পুরুষ কবুতরের লেজ ও শরীর ময়লা থাকে কিন্তু মেয়ে কবুতরের শরীর তুলনামূলক পরিষ্কার থাকে। পুরুষ কবুতরের ডাক খুব ঘন ও জোরে হয়, অপরদিকে মেয়ে কবুতরের ডাক থেমে থেমে ও আস্তে ডাকে।
১০) পুরুষ কবুতর হুমকি দিয়ে বা ভয় দেখিয়ে একটি প্রয়াস চালানোর চেষ্টা করে বা মাদীকে চার্জ করবে বা সাধারণত তার মনোযোগ পেতে হালকা ঠোকর চেহারা নেয় এবং আঘাত করে যদিও এটি ইচ্ছাকৃত ঠোকর নয়। পুরুষ কবুতর গলা ফুলীয়ে একজাগা থেকে লেজ নামিয়ে মাদিকে আক্রমন করে আর মাদি মাখা নাড়িয়ে মাথা উপর নিচ করে এক জাইগাই থাকে।
১১) পুরুষ কবুতর পুরো ঠোঁট ডুবিয়ে পানি পান করে, যেখানে মাদি কবুতর অল্প বা অর্ধেক ঠোঁট ডুবিয়ে পানি পান করে।
১২) পুরুষ কবুতর মেয়ে কবুতরের থেকে বেশি আক্রমনাত্মক হয়। যদিও অনেক ক্ষেত্রে এর বাতিক্রম দেখা যায়। যদিও ডাকের কম্পন দুই জনের সমান হয় না।
১৩) পুরুষ কবুতর সূর্য দুবার আগে বেশি অস্থির থাকে, বিশেষ করে, আর মাদি কবুতর শান্ত থাকে।
১৪) পুরুষ কবুতর কবুতর সূর্য উঠার পর নেস্ত এ অবস্থান নেয়,আর মাদি সারারাত বাসায় বসে থাকে।
১৫) ব্রিডিং এর আগে নর কবুতর মাদির পায়ের কাছে বসে এক ধরনের শব্দ করে, যদিও এ সব গৌণ বৈশিষ্ট্য এর মধ্যে পড়ে।
১৬) মাদি কবুতর নর কবুতরের মুকে ঘাড়ে ও গলাই ঠোঁট দিয়ে গ্রুমিং করে দেয়। আর মেটিং এর আগে ঠোঁট দিয়ে খওয়ায়ে দেই।
আশা করি এর মাধ্যমে অনেকের অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর হবে ও অনেক অনাখাঙ্কিত পরিস্থিতি থেকে বাঁচা যাবে।
Pigeon

Pigeon

Pigeon
, any of several hundred species of birds constituting the family Columbidae (order Columbiformes). Smaller forms are usually called doves, larger forms pigeons. An exception is the white domestic pigeon , the symbol known as the “dove of peace.”
Nicobar pigeon
Nicobar pigeon (Caloenas nicobarica ).
Brian Gratwicke
Pigeons occur worldwide except in the coldest regions and the most remote islands. About 250 species are known; two-thirds of them occur in tropical Southeast Asia, Australia, and the islands of the western Pacific, but the family also has many members in Africa and South America and a few in temperate Eurasia and North America. All members of the family suck liquids, rather than sip and swallow as do other birds, and all pigeon parents feed their young “pigeon’s milk ,” the sloughed-off lining of the crop, the production of which is stimulated by the hormone prolactin. The nestling obtains this “milk” by poking its bill down the parent’s throat.
Pigeons are gentle, plump, small-billed birds with a skin saddle (cere) between the bill and forehead. All pigeons strut about with a characteristic bobbing of the head. Because of their long wings and powerful flight muscles, they are strong, swift fliers. Pigeons are monogamous; i.e., they mate for life, and the survivor accepts a new mate only slowly. The female lays two glossy white eggs in a flimsy nest that barely holds them. The female generally incubates the eggs by night, the male by day. The incubation period is 14 to 19 days, but the young are cared for in the nest for another 12 to 18 days.
Homing pigeons ( Colomba livia) possess a group of neurons that are used to help the birds process changes in the direction, intensity, and polarity of magnetic fields around them. The sensitivity of the pigeons to these physical properties allows them to determine their directional heading and altitude by using
Earth’s magnetic field . The identity of the physical structure within the pigeon’s body that collects this
magnetic field information and sends it to the brain remains unknown, but some scientists suspect that it may lie within the
inner ear.
The numerous genera of pigeons may be classified into subfamilies as follows:
The Columbinae, the typical, or true, pigeons, consists of about 175 species in about 30 genera. These often gregarious seed and fruit eaters are found worldwide in temperate and tropical regions. Some are ground feeders, others feed partly or wholly in trees. They are generally coloured soft gray and brown to black, sometimes with iridescent patches on the plumage. The cosmopolitan genus
Columba—including the Old World wood pigeons and the New World band-tailed pigeons—is classified in this group, along with the
Streptopelia species, the Old World turtledoves and ringdoves. To this genus also belong the street pigeons so common in urban areas. These are composed of a bewildering array of crossbreeds of domesticated strains , all of them ultimately traceable to the Old World rock dove (Columba livia). The rock dove is typically dull in colour—gray and white rump and two large black wing bars; this Eurasian species nests above 5,000 feet (1,525 metres) in Asia. It has been domesticated and selectively bred since 3000
BCE with the production of numerous colour variants and about 200 named strains—show pigeons, racing pigeons, and large edible types. Among such strains, pouter pigeons have a large, inflatable gullet; carrier pigeons have a long bill; runts, a massive bill and body; barbs, a short bill. Fantails may have 42 tail feathers; owl pigeons have diverging throat feathers; frillbacks, the feathers reversed; jacobins, hoodlike neck feathers. Tumblers tumble backward in flight.
The many other Old World genera in the subfamily Columbinae include the chicken-sized
pheasant pigeon (Otidiphaps nobilis) of New Guinea. In the New World the white-winged doves and the mourning dove ( Zenaida ) are popular game birds; Central and South America support the terrestrial ground doves (Metriopelia) and quail doves (Geotrygon). The New World
passenger pigeon is extinct.
The Treroninae, or the fruit pigeons , consists of about 115 species in about 10 genera, found primarily in Africa, southern Asia, Australia, and the Pacific islands. These fruit-eating birds are soft-billed, short-legged, and arboreal in habit. Their plumage is usually greenish, often with yellow, red, or other brightly coloured markings. The group includes the heavyset imperial pigeons (Ducula ); the small and extremely colourful fruit doves (Ptilinopus ); the blue pigeons ( Alectroenas), dark blue in colour with red wattles; and the usually crimson-legged green pigeons ( Treron).
The Gourinae, or crowned pigeons, consists solely of three species (genus Goura ), found in New Guinea. Blue-gray birds with fanlike head crests, they are the largest of all pigeons—nearly the size of a turkey.
The Didunculinae consists of a single species, the tooth-billed pigeon ( Didunculus strigirostris ), which is native to Samoa. This fruit-eating, terrestrial pigeon has adopted arboreal ways in response to near extermination by introduced predators. Unlike most pigeons, it uses its feet to hold down its food while pecking off pieces.

Wednesday, August 22, 2018

পৃথিবীতে কত প্রজাতির কবুতর আছে..?

পৃথিবীতে কত প্রজাতির কবুতর আছে..?

পৃথিবীতে প্রায় ২০০ জাতের কবুতর পাওয়া যায়। বাংলাদেশে প্রায় ৩০ প্রকার কবুতর রয়েছে। বাংলাদেশের সর্বত্র এসকল কবুতর রয়েছে। বাংলাদেশের জলবায়ু এবং বিস্তীর্ণ শষ্যক্ষেত্র কবুতর পালনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। পূর্বে কবুতরকে সংবাদ বাহক, খেলার পাখি হিসাবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এটা পরিবারের পুষ্টি সরবরাহ, সমৃদ্ধি, শোভাবর্ধনকারী এবং বিকল্প আয়ের উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হচেছ। এদের সুষ্ট পরিচর্যা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রতিপালন করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা যায়। কবুতর প্রতিপালন এখন শুধু শখ ও বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং তা এখন একটি লাভজনক ব্যবসা হিসাবে পরিগণিত হয়েছে। কবুতর বাড়ি ও পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা ছাড়াও অল্প খরচে এবং অল্প ঝামেলায় প্রতিপালন করা যায়।বাংলাদেশে কবুতরের জাতের মধ্যে গিরিবাজ জনপ্রিয়।

কবুতরের পাতলা পায়খানা

কবুতরের পাতলা পায়খানা

পাতলা পায়খানা সর্দিকাশি


সবার কাছে বিশেষ অনুরোধঃ
বর্ষা ও শীতে কমবেশি সব কবুতরই সাধারন কিছু সমস্যায় ভুগে, এই রোগগুলো খুবই স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক। কিন্তু অধিকাংশ খামারই এতে বেশি ঘাবড়ে যায়, আর এখানেই যত বিপত্তি ঘটে। খামারই রা ঘাবড়ে গিয়ে নানা জনের নানা পরামর্শ নিয়ে, বিভিন্ন ধরনের ঔষধ প্রয়োগ করে থাকেন। আর এতে কবুতরের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। যেমনঃ এক খামারি কবুতরের সাধারন পাতলা পায়খানার জন্য একজন উপদেশ দেন (Doxivet,Filmet,Sk Mox) এবং যথারীতি সেই খামাড়ী এই ঔষধ গুলো প্রয়োগ করেন, যখন কোন উপকার না পেয়ে আবার আর একজন কে জিজ্ঞাসা করে সে আবার আরেক ধরণের ঔষধ এর পরামর্শ দেন...। আবার সেই একী ফলাফল। আবার একদিন এক কবুতরের টনসিল ফূলে বড় হয়ে গেছে আরেকজন জানালেন যে এটা কেটে ফেলে দিতে হবে এবং এই কাজটা তিনি খুবই সানন্দে করতে রাজি হলেন।কিন্তু তিনি হয়তো জানেনই না যে টনসিলের কাজ কী। একদিন এক পরিচিত জন তার কবুতর মারামারি করে মাথা রক্তারক্তি করে ফেলেছে উনি গাড়ো করে ফিটকারী পানি প্রয়োগ করেছেন। আমরা আমাদের এই ধরণের সমস্যা হলে কী করতাম ? মনে হয় না কখনই এই ঔষধ গুলো আমারা প্রয়োগ করতাম কখনই না...তাই না! সর্দী,কাশীর মতো সাধারণ কিছু রোগের ক্ষেত্রে আগে চিন্তা করেন যে আপনার হলে আপনি এই অবস্থাই কী করতেন? যাই হোক, এখন আসুন আমরা জেনে নেয় কী করলে আমাদের এই ধরণের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি।
) আপনার খাঁচা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
) জীবাণূ বিরোধী ওষুধের বদলে, বোড়ীক পাওডার ছিটান শুকনো।
) খাঁচাই এক টূকড়া কাঠ রাখুন, যাতে আপাণড় কবুতর দাঁড়াতে পারে। বা একটুকরো চট কেটে দিন।
) নিয়মিত স্যালাইন দিন।
) বাতাস ও বৃষ্টির ছাট থেকে প্রতিরোধ করুন।
) নিয়মিত সবুজ বা র চা দিন আদা ও মধু মীক্স করে।
) রসূন বাটা দিন পানির সাথে।
) পাতলা পায়খানা যদি বেশী হয় তবে হামদাদ এর পেছীশ ট্যাবলেট ১/২ করে দিনে ২ বার প্রয়োগ করুন।
Kobutorer dicentry treatment er bisoye help korben Kf SohelRabbi
Like · · Follow Post · Share · Saturday at 11:01
Kf SohelRabbi Ai borsai..eta khubi normal eta niye chinta korar kichu nai...besi hole saline o Hamdarad er Paches 1/3 kore dine 2 bar den..thanks
) দশ জনের মতামত না নিয়ে একজনের মতামত এর উপর ঔষধ দিন।
) কোন ঔষধে কাজ না হলে নতুন ঔষধ প্রয়োগের আগে নাক্স ভুম ৩০(হোমিও) ৩ মিও)অল্প একটু পানিরসাথে দিন তারপর অন্য ঔষধ দিন।
) এক দিন সব কবুতর কে হোমিও tiberculinum 30 দিতে হবে ১ সিসি ১ লিত পানিতে।
) প্রতিরোধেঃ এক দিন সব কবুতর কে হোমিও tiberculinum 30 দিতে হবে ১ সিসি ১ লিটার পানিতে।
) প্রতিরোধেঃ Calcaria Curb 30 দিতে হবে ১ সিসি ১ লিটার পানিতে।
) Daulkamara 30 বর্ষা বা আদ্রতা বা ঋতু জনিত সর্দিকাশি ইত্যাদি তে ৩ ফোটা অল্প একটু পানির সাথে দিনে ৩ বার।
) শুধু ঘনকাশি হলে বা ঘরঘর করলে। Costicum 30 তে ৩ ফোটা অল্প একটু পানির সাথে দিনে ৩ বার।
শুধু একটু চিন্তা ও সঠিক সিধান্ত আপনাকে অনেক সুবিধা ও সুখবর বয়ে আনবে। আর সবাইকে একটু অনুরধ(অনুগ্রহ করে) না জেনে ঔষধ দিবেন না ।
কবুতর পালন ও চিকিৎসা

কবুতর পালন ও চিকিৎসা

কবুতর পালন ও চিকিৎসা

কবুতর পালন ও চিকিৎসা: প্রাথমিক তথ্য
আমাদের দেশে বিভিন্ন গৃহপালিত পাখির মধ্যে কবুতর সর্বাধিক জনপ্রিয়। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কবুতর পালন করা হয়- এর বাহ্যিক সৌন্দর্য্যগত দিকগুলোর কারণে। প্রাচীনকালে কবুতর পালন করা হতো চিঠি আদান প্রদানের কাজে। শোনা যায় প্রাচীনকালে রাজা বাদশাহ তাঁদের বিভিন্ন ধরনের বার্তা প্রেবণের জন্য বেছে নিতেন কবুতরকে। এছাড়া, সারা পৃথিবী জুড়ে কবুতরকে ধরা হয় শান্তির দূত হিসেবে। এই কারণে,বিভিন্ন গঠনমূলক কাজে ধর্মাধর্ম নির্বিশেষে কবুতরকে খাঁচামুক্ত করে উদ্বোধন করা হয়।
সবচেয়ে বড় কথা, কবুতর পালন করার জন্য অতিরিক্ত বা বাহুল্য কোন খরচ হয় না। কবুতরকে সহজেই পোষ মানানো যায়। বাড়ির যেকোন কোণ বা আঙিনা অথবা বাড়ির ছাদ কিংবা কার্নিশের মত ছোট বা অল্প জায়গাতে ও কবুতর পালন করা যায়। এমনকি ছাদের সাথে ঝুড়ি ঝুলিয়ে ও কবুতর পালন করা যায়।এই কারণে, শহরে কী গ্রামে অনেক বাড়িতেই কবুতর পালন করা যায়।
কবুতরের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু এবং বলকারক বিশেষজ্ঞরা বলেন, কবুতরের মাংসে সাধারণ অন্যান্য পাখির মাংসের চাইতে প্রোটিনের পরিমান বেশি। ফলে আমিষের পাশাপাশি প্রটিনের বাড়তি চাহিদা পূবণের জন্য ও কবুতরের মাংস খাওয়া হয়ে থাকে। বানিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করে অনেকেই অল্প সময়ে এটাকে লাভ জনক ব্যবসা হিসেবে দাঁড়া করাতে পেরেছেন। কবুতর সাধারণভাবে জোড়ায় বেঁধে বাস করে। প্রতি জোড়ায় একটি পুরুষ এবং একটি স্ত্রী কবুতর থাকে। এরা ১২ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। যতদিন বেঁচে থাকে_ ততদিন এরা ডিমের মাধ্যমে বাচ্চা প্রজনন করে থাকে।ডিম পাড়ার পর স্ত্রী ও পুরুষ উভয় কবুতরই পর্যায়ক্রমে উক্ত ডিমে তা দিয়ে থাকে। কবুতরের কোন জোড়া হঠাৎ ভেঙে গেলে সেই জোড়া তৈরি করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়।নতুন জোড়া তৈরি করার জন্য স্ত্রী ও পুরুষ কবুতরকে একঘরে কিছুদিন রাখতে হয়।
কবুতর পালনের বিভিন্ন সুবিধা সমুহ
কবুতর পালন করলে অসুবিধার চেয়ে সুবিধার পরিমাণ বেশি। পরবর্তীতে কবুতর পালনের বিভিন্ন সুবিধাসমূহ উল্লেখ করা হলো।
(১) সাধারনত একটি ভাল জতের কবুতর বছরে ১২ জোড়া ডিম প্রদানে সক্ষম হয়ে থাকে। এই ডিম গুলোর প্রায় প্রতিটি থেকেই বাচ্চা পাওয়া যায়। এই বাচ্চা পরবর্তী ৪ সপ্তাহের মধ্যেই খাওয়া বা বিক্রির উপযোগী হয়।
(২) গৃহপালিত অন্যান্য পাখির মধ্যে কবুতরকে পোষ মানানো বা লালন করা যায়।
(৩) খুবই অল্প জায়গায় কবুতর লালন পালন করা যায়। এমনকি ঝোলানো ঝুড়িতেও কবুতর পালন করা সম্ভব। লালন পালনে কম জায়গা লাগে বলে কবুতর পোষায় খরচের পরিমাণ একেবারেই কম।
(৪) বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কবুতর নিজের খাবার নিজেই খুঁজে নিয়ে থাকে। এই কারণে কবুতরের খাবারের জন্য বাড়তি যত্ন বা খরচ খুব একটা হয় না বললেই চলে।
(৫) কবুতরের থাকার জায়গার জন্য বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আঙিনা, বা ছাদের ওপর কাঠের ঘর তৈরি করে অনায়াসেই কবুতর পালন করা যায়। প্রমাণ সাইজের ঝুড়িতে করে ও কবুতর পালন করা যায়।
(৬) একটি পূণাঙ্গ বয়সের কবুতর ডিম দেবার উপযোগী হতে ৫ থেকে ৬ মাস মসয় লাগে। এই অল্প সময় অতিক্রান্ত হবার পর থেকেই কবুতর বছরে প্রায় ১২ জোড়া ডিম প্রদানে সক্ষম। ২৬ থেকে ২৮ দিন বয়সেই কবুতরের বাচ্চা খাবার উপযোগী হয়ে থাকে বা এই বাচ্চাকে বাজারজাত করা যায়। সাধারণত কবুতরের বাচ্চা রুগীর পথ্য হিসেবেও অনেকে বেছে নেন।
(৭) কবুতরের ডিম থেকে মাত্র ১৮ দিনেই বাচ্চা সাধারণ নিয়মে ফুটে থাকে। এই বাচ্চা আবার পরবর্তী ৫ থেকে ৬ মাস পরে নিজেরাই ডিম প্রদান শুরু করে।ফলে কবুতর বংশ পরম্পরায় প্রাকৃতিক নিয়মে নিজেরাই বাড়াতে থাকে নিজেদের সংখ্যা।
(৮) কবুতরের মাংস প্রচুর চাহিদা রয়েছে।কারণ, কবুতরের মাংস খুবই সুস্বাদু ও বলকারক। তাছাড়া, বাজারের অন্যান্য মাংসের যোগান থেকে কবুতর কিছুটা সস্তাতে ও পাওয়া যায়।
একটি খুব ভালো প্রজাতির কবুতর লালন করলে পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে সেই জোড়া থেকে কয়েক জোড়া কবুতর পাওয়া খুব বেশি আর্শ্চযজনক বিষয় নয়। এই কবুতরকে একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে ধরা যেতে পারে। কারণ, কবুতর লালন-পালনের খরচ খুব একটা নেই। এমনকি কবুতরের রোগ ব্যাধি কম হয়। কবুতরের থাকার জায়গা নির্বাচনে ও অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয় না। এই কারণে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে কবুতর পালন অবশ্যই লাভজনক।
ধারাবাহিক ভাবে কবুতর তার বংশবৃদ্ধি করে বলে অনেকেই আজকাল কবুতর পালনের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।মুরগির মাংসের বিকল্প হিসেবে কিংবা অতিথি পাখির বিকল্প হিসেবে অনেকেই কবুতরের মাংস বেছে নিয়ে থাকেন।
লেখক: আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ-পরিচালক, বংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট।
কবুতর প্রতিপালন ব্যবস্থাপনা: বিস্তারিত তথ্য
ভূমিকা
ইতিহাস থেকে জানা যায় বহু আদিকাল থেকে মানুষ কবুতর পালন করে আসছে। সে সময় মানুষ দেব-দেবীকে সন্তুষ্ট করার জন্য কবুতর উৎসর্গ করতো। এছাড়াও এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সংবাদ প্রেরণ, চিত্ত বিনোদন ও সুস্বাদু মাংসের জন্য কবুতরের বহুল ব্যবহার ছিল। বর্তমানে আমাদের দেশেও প্রধানত মাংস ও চিত্ত বিনোদনের জন্য কবুতর পালন করা হয়ে থাকে।
কবুতর প্রতিপালনের প্রয়োজনীয়তা
কবুতর প্রতিপালন এখন শুধু শখ ও বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং তা এখন একটি লাভজনক ব্যবসা হিসাবে পরিগণিত হয়েছে। কবুতর বাড়ি ও পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা ছাড়াও অল্প খরচে এবং অল্প ঝামেলায় প্রতিপালন করা যায়। কবুতরের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু এবং বলকারক হিসেবে সদ্যরোগমুক্ত ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত উপযোগী। রোগীর পথ্য হিসেবে কবুতরের মাংস ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। আমাদের দেশে বর্তমানে অনেকে বাণিজ্যিকভিত্তিতে কবুতর পালন করছেন।
কবুতর প্রতিপালনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব
বাংলাদেশে সাধারণত কবুতরকে মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। কবুতরের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু, বলকারক ও রোগীর পথ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয় যা সাধারণ মানুষের নিকট অতি প্রিয়।
১। ন্যুনতম ব্যয়ে প্রতিপালন:
হাঁস-মুরগীর তুলনায় কবুতর পালন মোটেও ব্যয়বহুল নয়। স্বল্প পুঁজি, অল্প খরচ ও সীমিত স্থানে অতি সহজে কবুতর পালন করা যায়।
২। কবুতরের ঘর নির্মাণে ন্যুনতম ব্যয়:
গ্রামাঞ্চলে অত্যন্ত সাধারণ পদ্ধতিতে পারিবারিকভাবে কবুতর প্রতিপালন করা যায়। বাড়ির চালের বাড়তি অংশে কাঠ বা বাঁশের ঘর বা খোপের মতো করে দিলে এখানে আপনাআপনি কবুতর এসে বাসা বাঁধে এবং বংশবৃদ্ধি করে। এতে তেমন খরচ নেই বললেই চলে। এভাবে কবুতর প্রতিপালন করে অনেক পরিবার যেমন তাদের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে তেমনি অন্যভাবে নিয়মিত কবুতরের বাচ্চা বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে কবুতর প্রতিপালনেও সীমিত ব্যয় হয়। এদের ঘরের অধিকাংশই কাঠ ও বাঁশের তৈরি হয়ে থাকে। সর্বোপরি এজন্য খুব কম জায়গার প্রয়োজন হয়।
৩। ডিম ফোটার হার:
কবুতরের ক্ষেত্রে ডিম ফোটার হার ৯৮%, যা মুরগির ক্ষেত্রে প্রায়শ ৮০-৮৫% হয়ে থাকে। এদের ডিম ফোটানোর জন্য ইনকিউবেটর বা এজাতীয় কোনো ব্যয়বহুল যন্ত্রের প্রয়োজন হয় না।
জেনারেশন বিরতি
স্বল্প বয়সে এদের পুনরুৎপাদন শুরু হয়। তাই একজন উৎপাদনকারী অল্প সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভবান হতে পারে। একটি কবুতর সাধারণত বছরে ১০-১২ জোড়া বাচ্চা দেয়। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে ১৬-১৮ দিন সময় লাগে।
কবুতরের জাত
বহুবিচিত্র ধরনের নানা জাতের কবুতর রয়েছে। আমাদের দেশে ২০ টিও অধিক জাতের কবুতর আছে বলে জানা যায়। নিম্নে প্রধান কয়েকটি জাত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
১। গোলা
এই জাতের কবুতরের উৎপত্তিস্থল পাক-ভারত উপমহাদেশ। আমাদের দেশে এ জাতের কবুতর প্রচুর দেখা যায় এবং মাংসের জন্য এটার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। ঘরের আশেপাশে খোপ নির্মাণ করলে এরা আপনাআপনি এখানে এসে বসবাস করে। এদের বর্ণ বিভিন্ন সেডযুক্ত ধূসর এবং বারড-ব্লু রংয়ের। এদের চোখের আইরিস গাঢ় লাল বর্ণের এবং পায়ের রং লাল বর্ণের হয়।
২। গোলী
গোলা জাতের কবুতর থেকে গোলী জাতের কবুতর ভিন্ন প্রকৃতির। এ জাতের কবুতর পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের কলকাতায় বেশ জনপ্রিয় ছিল। এদের লেজের নীচে পাখার পালক থাকে। ঠোঁট ছোট হয় এবং পায়ে লোম থাকে না। এদের বর্ণ সাদার মধ্যে বিভিন্ন ছোপযুক্ত।
৩। টাম্বলার
এসব জাতের কবুতর আকাশে ডিগবাজী খায় বলে এদের টাম্বলার বলে। আমাদের দশে এই জাতটি গিরিবাজ নামে পরিচিত। এদের উৎপত্তিস্থল পাক-ভারত উপমহাদেশ। মনোরঞ্জনের জন্য আমাদের দেশে এদের যথেষ্ট কদর রয়েছে।
৪। লোটান
লোটন কবুতরকে রোলিং ( rolling ) কবুতরও বলা হয়। গিরিবাজ কবুতর যেমন শূন্যের উপর ডিগবাজী খায়, তেমন লোটন কবুতর মাটির উপর ডিগবাজী খায়। সাদা বর্ণের এই কবুতরের ঘুরানো ঝুঁটি রয়েছে। এদের চোখ গাঢ় পিঙ্গল বর্ণের এবং পা লোমযুক্ত।
৫। লাহোরী
আমাদের দেশে এই কবুতরটি শিরাজী কবুতর হিসেবে পরিচিত। এদের উৎপত্তিস্থল লাহোর। এদের চোখের চারদিক থেকে শুরু করে গলার সম্মুখভাগ, বুক, পেট, নিতম্ব, পা ও লেজের পালক সম্পূর্ণ সাদা হয় এবং মাথা থেকে শুরু করে গলার পিছন দিক এবং পাখা রঙ্গীন হয়। সাধারণত কালো, লাল, হলুদ, নীল ও রূপালী ইত্যাদি বর্ণের কবুতর দেখা যায়।
৬। কিং
কিং জাতের কবুতরের মধ্যে হোয়াইট কিং এবং সিলভার কিং আমেরিকাসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলিতে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কিং জাতের কবুতর প্রদর্শনী এবং স্কোয়াব (ঝয়ঁধন বাচ্চা) উৎপাদনে ব্যবহার হয়। এছাড়াও রয়েছে ব্লু রেড এবং ইয়েলো কিং। এই জাতের কবুতর মূলত প্রদর্শনীতে ব্যবহৃত হয়।
৭। ফ্যানটেল
এটি অতি প্রাচীন জাতের কবুতর। ফ্যানটেল জাতের কবুতরের উৎপত্তি ভারতে। এ জাতের কবুতর লেজের পালক পাখার মত মেলে দিতে পারে বলে এদেরকে ফ্যানটেল বলা হয়। এদের রং মূলত সাদা তবে কালো, নীল ও হলুদ বর্ণের ফ্যানটেল সৃষ্টিও সম্ভব হয়েছে। এদের লেজের পালক বড় হয় ও উপরের দিকে থাকে। পা পালক দ্বারা আবৃত থাকে। এ জাতের কবুতর প্রদর্শনীতে ব্যবহৃত হয় এবং দেশ বিদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
৮। জ্যাকোবিন
এই কবুতরের মাথার পালক ঘাড় অবধি ছড়ানো থাকে যা বিশেষ ধরনের মস্তকাবরণের মত দেখায়। এদের উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে এদের আদি জন্মস্থান ভারত বলেই ধারণা করা হয়। এই কবুতর সাধারণত সাদা, লাল, হলুদ, নীল ও রূপালী বর্ণের হয়। এদের দেহ বেশ লম্বাটে। চোখ মুক্তার মত সাদা হয়।
৯। মুকি
এ জাতের কবুতরের গলা রাজহাঁসের মত পিছন দিকে বাঁকানো এবং কম্পমান অবস্থায় থাকে। মুকি জাতের কবুতরের উৎপত্তি ভারতে বলে ধারণা করা হয়। এদের উভয় ডানার তিনটি উড়বার উপযোগী পালক সাদা হয় যা অন্য কোনো কবুতরে দেখা যায় না। এ জাতের কবুতরের মাথা সাদা, বুক খুব একটা চওড়া নয় তবে উঁচু ও বেশ কিছুটা সামনের দিকে বাড়ানো থাকে। সাদা, কালো এবং নীল বর্ণের এই কবুতরের পায়ে লোম থাকে না।
কবুতরের প্রজনন, ডিম উৎপাদন ও ডিম ফুটানো
হাঁস-মুরগির মতো যে কোনো মর্দা কবুতর মাদী কবুতরের সাথে হজে জোড়া বাঁধে না। এদেরকে এক সাথে এক সপ্তাহ রাখলে জোড়া বাঁধে। মুরগীর ন্যায় কবুতরের জননতন্ত্রে ডিম উৎপন্ন হয়। তবে ডিম্বাশয়ে একসাথে সাধারণত মাত্র দু'টি ফলিকুল তৈরি হয়।
এ কারণে প্রতিটি মাদী কবুতর দু'টি ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার ৪০-৪৪ ঘন্টা পূর্বে ডিম্ব স্খলন হয় এবং ডিম পাড়ার কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা পূর্বে তা নিষিক্ত হয়। অর্থাৎ যে ১৬-২০ ঘন্টা পর্যন্ত ডিম ডিম্বনালীতে থাকে সে সময়ে তা নিষিক্ত হয়ে থাকে।
ডিম পাড়ার পর থেকে মর্দা ও মাদী উভয় কবুতর পর্যায়ক্রমে ডিমে তা দিতে শুরু করে। মাদী কবুতর প্রায় বিকেল থেকে শুরু করে পরের দিন সকাল পর্যন্ত ডিমে তা দেয় এবং বাকী সময়টুকু অর্থাৎ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মর্দা কবুতর তা দিয়ে থাকে। তা দেয়ার পঞ্চম দিনেই ডিম পরীক্ষা করে উর্বর বা অনুর্বর ডিম চেনা যায়। বাতির সামনে ধরলে উর্বর ডিমের ভিতর রক্তনালী দেখা যায়। কিন্তু অনুর্বর ডিমের ক্ষেত্রে ডিমের ভিতর স্বচ্ছ দেখাবে। সাধারণত ডিম পাড়ার ১৭-১৮ দিন পর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এভাবে একটি মাদী কবুতর সাধারণত ১২ মাসে ১০-১২ জোড়া বাচ্চা উৎপাদন করতে পারে। জন্মের প্রথম দিন থেকে ২৬ দিন বয়স পর্যন্ত কবুতরের বাচ্চার ক্রমবর্ধমান অবস্থা থাকে। প্রথমে সারা দেহ হলুদ পাতলা বর্ণের লোম দ্বারা আবৃত থাকে।
এই সময় নাক ও কানের ছিদ্র বেশ বড় দেখায়। প্রায় ৪-৫ দিন পর বাচ্চার চোখ খোলে বা ফুটে। পনের দিনে সমস্ত শরীর পালকে ছেয়ে যায়। প্রায় ১৯-২০ দিনে দু'টো ডানা এবং লেজ পূর্ণতা লাভ করে ও ঠোঁট স্বাভাবিক হয়। এই ভাবে ২৬-২৮ দিনে কবুতরের বাচ্চা পূর্ণতা লাভ করে। কবুতর সাধারণত ২০-৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
পিজিয়ন মিল্ক
কবুতরের খাদ্যথলিতে পিজিয়ন মিল্ক উৎপাদিত হয়। এই খাদ্য থলিতে দু'টি অংশ বা লোব (ষড়নব) থাকে। ডিমে তা দিতে বসার প্রায় অষ্টমদিন থেকে "পিজিয়ন মিল্ক" উৎপাদনের প্রস্তুতি শুরু হয়। এন্টিরিত্তর পিটুইটারী গ্রন্থির প্রোল্যাকটিন ( Prolactin) হরমোনের প্রভাবে এই ' পিজিয়ন মিল্ক' উৎপন্ন হয়। এ কারণে কবুতর ছানার জন্য কোনো বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না। কারণ প্রায় ৭ দিন পর্যন্ত ছানা তার মাতা-পিতার কাছ থেকে প্রকৃতি প্রদত্ত খাবার পেয়ে থাকে। এটিকে পিজিয়ন মিল্ক বা কবুতরের দুধ বলা হয়। পিজিয়ন মিল্ক হলো পৌষ্টিক স্তরের কোষের মধ্যে চর্বির গুটিকা ( globules of fat ) যা পিতা মাতা উভয়ের খাদ্য থলিতে যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ হয়। পিজিয়ন মিল্ক কবুতর ছানার জন্য একটি আদর্শ খাবার। এতে ৭০% পানি, ১৭.৫% আমিষ, ১০% চর্বি এবং ২.৫% বিভিন্ন খনিজ পদার্থ থাকে। মাতাপিতা উভয় কবুতরের খাদ্য থলির অভ্যন্তরীণ আবরণ থেকে পিজিয়ন মিল্ক উৎপন্ন হয়। কবুতরের জিহ্বা লম্বা ও সরু। মুখ গহ্বরের নীচের অংশ বেশ প্রশস্ত হয় যা ছানাকে খাওয়ানোর উপযোগী। মাতা ও পিতা কবুতর ছানার মুখের মধ্যে মুখ প্রবেশ করিয়ে খাবার সরাসরি অন্ননালীতে পৌছে দেয়।
কবুতরের ঘর
আমাদের দেশে বিশেষত গ্রামে টিন বা খড়ের চালা ঘরের কার্ণিশে মাটির হাড়ি অথবা টিন বেঁধে রেখে কবুতর পালনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া কাঠের তৈরি ছোট ছোট খোপ তৈরি করেও কবুতর পালা হয়ে থাকে। মজার ব্যাপার হলে, কয়েক জোড়া কবুতরের ঘর করে এক জোড়া কবুতর পালন করলে কয়েক দিনের মধ্যে বাকী ঘরগুলোতে নতুন জোড়া কবুতর এসে বাসা বাঁধে। কবুতর পোষা খুব সহজ এবং লাভজনক তা বলাই বাহুল্য। অল্প-পরিসরে যা বাণিজ্যিকভিত্তিতে কবুতর পালনের জন্য অবশ্যই সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা থাকা বাঞ্ছনীয়। নিম্নে কবুতরের ঘর বা খোপ তৈরির বিশেষ ব্যবস্থাসমূহ আলোচনা করা হলো।
স্থান নির্বাচনঃ কবুতরের খামারের জন্য উঁচু ও শুষ্ক সমতল ভূমি থাকা প্রয়োজন।
ঘরের উচ্চতাঃ কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর, বেজী ইত্যাদি যেন কবুতরের ঘর নাগালে না পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ঘর উঁচু করতে হয়। এ উদ্দেশ্যে কাঠ বা বাঁশের খুঁটি পুঁতে তার উপর ঘর নির্মাণ করা যেতে পারে।
ঘরের পরিসরঃ প্রতি এক জোড়া কবুতরের জন্য একটি ঘর থাকা প্রয়োজন। এক জোড়া কবুতর যাতে ঘরের ভিতর স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে ফিরতে পারে তা লক্ষ্য রেখে ঘর নির্মাণ করতে হবে।
স্বাস্থ্য সম্মত ব্যবস্থাঃ কবুতরের ঘর বা খোপ এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে যেন সেখানে পোকা-মাকড়, কৃমি, জীবাণু ইত্যাদির উপদ্রব কম থাকে এবং ঘর সহজেই পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা যায়।
সূর্যালোকঃ ঘরে যাতে সূর্যের পর্যাপ্ত আলো প্রবেশ করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ সূর্যের আলো যেমন পাখির দেহে ভিটামিন-ডি সৃষ্টিতে সাহায্যে করে তেমনি পরিবেশও জীবাণুমুক্ত রাখে।
বায়ু চলাচলঃ কবুতরের ঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কারণ দূষিত বাতাস বা পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাবে পাখির স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে।
কবুতরের খাদ্য
হাঁস-মুরগির ন্যায় কবুতরের খাদ্যে শ্বেতসার, চর্বি, আমিষ, খনিজ ও ভিটামিন প্রভৃতি থাকা প্রয়োজন। কবুতর তার দেহের প্রয়োজন এবং আকার অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। প্রতিটি কবুতর দৈনিক প্রায় ৩০-৫০ গ্রাম পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করে থাকে। কবুতর প্রধানত গম, মটর, খেশারী, ভুট্টা, সরিষা, যব, চাল, ধান, কলাই ইত্যাদি শস্যদানা খেয়ে থাকে। মুক্ত অবস্থায় পালিত কবুতরের জন্য সকাল-বিকাল মাথা পিছু আধ মুঠ শস্যদানা নির্দিষ্ট পাত্রে
খাদ্য উপাদান পরিমাণ (%)
ভুট্টা ৩৫
মটর ২০
গম ৩০
ঝিনুকের গুঁড়া/চুনাপাথর চূর্ণ/অস্থিচূর্ণ ০৭
ভিটামিন/এমাইনো এসিড প্রিমিক্স ০৭
লবণ ০১
মোট = ১০০
রেখে দিলে প্রয়োজন মত তারা খেতে পারবে। বাণিজ্যিকভিত্তিতে কবুতর উৎপাদনের জন্য নিম্নে প্রদত্ত খাদ্য মিশ্রণ ব্যবহার করা উত্তম।
কবুতরের খাদ্য তালিকা
এই সাথে কবুতরের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে। এক পাত্রে কবুতরের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার ও অন্য পাত্রে প্রয়োজন মত পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি রাখতে হবে।
কবুতরের শারীরবৃত্তিক তথ্যাদি
* দেহের তাপমাত্রা = ৩৮.৮-৪০০ সে
* দৈহিক ওজন = (ক) হালকা জাতঃ ৪০০-৪৫০ গ্রাম
(খ) ভারী জাতঃ ৪৫০-৫০০ গ্রাম
* পানি পান = (ক) শীতকালঃ ৩০-৬০ মিলি প্রতিদিন
(খ) গ্রীষ্মকালঃ ৬০-১০০ মিলি প্রতিদিন
* খাদ্য গ্রহণ = ৩০-৬০ গ্রাম প্রতিদিন (গড়)
* ডিম ফুটানোর সময়কাল = ১৭-১৮ দিন।
কবুতরের গুরুত্বপূর্ণ রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
শীতের বার্তি টেনশন থেকে মুক্ত থাকুন । রোগ মুক্ত রাখুন আপনার সখের  কবুতর কে      

শীতের বার্তি টেনশন থেকে মুক্ত থাকুন । রোগ মুক্ত রাখুন আপনার সখের  কবুতর কে      


। আজকে আমরা এই শীতে আপনার পোষা পাখিটিকে সুস্থ সবল রাখার জন্য কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আপনার পাখিটিকে শীতল ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে আপনার পোষা পাখির খাঁচা বা এটি যে রুমে থাকে তার তাপমাত্রা যেন কোনভাবেই ৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না নেমে যায়। এমনকি হঠাৎ করে আসা ঠাণ্ডা বাতাস পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং আপনার পাখিকে অসুস্থ করে দিতে পারে। তাই এই শীতে আপনার পোষা পাখিটিকে সুস্থ সবল রাখতে হলে অবশ্যই তার জন্য উষ্ণ ও আরামদায়ক পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে।
গত কয়েক বছরের বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে আমাদের দেশে শীতকালে প্রায়শই শৈত্য প্রবাহ হয়। এছাড়াও ঠাণ্ডা কুয়াশাচ্ছন্ন মেঘলা আবহাওয়ার কারনে অনেক সময়ই এক টানা অনেক দিন সূর্যের আলো থেকে আমরা বঞ্চিত হই। যার ফলে পোষা পাখিরা খুব সহজেই ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হয়। পাখির যখন ঠাণ্ডা লাগে তখন তারা পালক ফুলিয়ে এক জায়গায় বসে থাকে, বেশী ঘুমায়, নড়াচড়া অথবা খাওয়া দাওয়া কমে যায় অনেক সময় হাঁচি দেয়।
ঠাণ্ডার হাত থেকে পাখিকে সুরক্ষিত রাখতেঃ
১। পাখির খাঁচা এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে সরাসরি ঠাণ্ডা বাতাস না লাগে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অথবা শৈত্য প্রবাহ চলাকালীন সময়ে ঘরের জানালা দরজা ঠিক ভাবে বন্ধ রাখতে হবে আর যারা বারান্দায় পাখি রাখেন তাদের অবশ্যই বারান্দা পলিথিন বা তাবুর কাপড় বা ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
২। প্রতিদিন পাখির খাঁচা ২/৩ ঘণ্টা এমন ভাবে রোদে রাখুন যাতে খাঁচার এক পাশে রোদ লাগে এবং অন্য পাশে ছায়া থাকে।
৩। রাতের বেলা পাখির খাঁচা অবশ্যই মোটা কাপড় বা হালকা কম্বল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে বাতাস চলাচলের জন্য কিছু জায়গা থাকে (উপর থেকে ৪ অংশের ৩ অংশ কাপড় দিয়ে ঢাকা এবং নিচের ১ অংশ খোলা )।
৪। পাখির শীতকালিন সম্পূরক খাবারঃ মধু, আদা, তুলসি পাতা, পুদিনা পাতা এবং অপরিশোধিত এপেল সিডার ভিনেগার (Unfiltered ACV) পাখির ঠাণ্ডা প্রতিরোধ করে এবং পাখির ঠাণ্ডার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। বিশুদ্ধ মধু, অপরিশোধিত এপেল সিডার ভিনেগার (Unfiltered ACV), তুলসি এবং টাটকা শাক সবজি ও ফলমূল পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অথবা ঠাণ্ডার চিকিৎসায় তুলসির দ্রবন/শরবত প্রতি ২ সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করা যাবে। (তুলসির দ্রবন/শরবত তৈরির প্রনালী )। এছাড়া অপরিশোধিত এপেল সিডার ভিনেগার (Bragg Unfiltered ACV) মিছ্রিত পানি প্রতি ২ সপ্তাহে টানা ৩ দিন ( ছোট আকারের পাখির জন্য ৫ মিলি ১ লিটার পানিতে, বড় আকারের পাখির জন্য ১০ মিলি ১ লিটার পানিতে) খেতে দিতে পারেন। আর পাখির শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য সজনে পাতা নিয়মিত খেতে দিন। সজনে পাতায় ভিটামিন , খনিজ পদার্থ , প্রোটিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্টস এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যৌগিক উপাদান বিদ্যমান যা আপনার পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং সহজেই ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হবে না। ( সজনে পাতার পুষ্টিগুণ )
৫। শীতকালে পাখির সীডমিক্সে তেল জাতীয় বীজ যেমন তিল/গুজি তিল, সূর্যমুখীর বীজ, ক্যানারি এর পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।
৬। পাখির খাঁচা, খাবারের পাত্র এবং পানির পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং প্রতিদিন পরিষ্কার পাত্রে তাদের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার খেতে দিন। এতে করে আপনার পাখি ব্যাকটেরিয়া অথবা ফাঙ্গাস এর আক্রমন থেকে সুরক্ষিত, সুস্থ ও সবল থাকবে যার ফলে হঠাৎ করে ঠাণ্ডা লাগার ভয় কমে যাবে।
সতর্কতাঃ
পাখির রেসপিরেটরি সিস্টেম(শ্বাসতন্ত্র) অত্যন্ত সংবেদনশীল। এরা ধোঁয়া সহ্য করতে পারে না। সুতরাং পাখিকে উষ্ণ/গরম রাখার জন্য কোন ভাবেই আগুন/কয়লা ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়াও বেশ কিছু হিটার আছে যাতে ননস্টিকি আবরণ না থাকার ফলে ধোঁয়া উৎপন্ন হয় আবার কিছু গ্যাস/কেরসিন হিটার আছে যা থেকে এক ধরণের গ্যাস তৈরি হয় যা আপনার পাখির জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। কিছু রুম হিটার আছে যা ব্যবহার করা নিরাপদ কিন্তু অবশ্যই সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে এবং পাখির খাঁচার থেকে দূরে স্থাপন করতে হবে।

https://m.youtube.com/watch?v=j_RZI4noGv8&feature=youtu.be
কবুতর ডিম না দিলে কি করবেন ?

কবুতর ডিম না দিলে কি করবেন ?

পাখি বা কবুতর ডিম না দিলে কি করবেন ?

আমরা অনেকেই বিভিন্ন রকম পাখি ও কবুতর সখের বশে পুষে থাকি। কখনো কখনো দেখা যায় এরা সঠিক যত্ন নেবার পরো ডিম দেয় না। এই লেখাটিতে আমি এমন একটি উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করছি যেটা ফলো করলে আপনার পাখি বা কবুতর ২ সপ্তাহের মধ্যে ডিম পাড়বে।
কাজটি সম্পন্ন করতে আপনাকে একটি ঔষধ ব্যবহার করতে হবে ঔষধ টি হল ইক্যাপ ক্যাপসুল। এটা মূলত ভিটামিন ই এর ক্যাপসুল।
ঔষধের ব্যবহার উঙ্গচ
একটি ক্যাপসুল ২৫০ গ্ৰাম খাবারের সাথে মিশিয়ে প্যাকেট করে রাখতে হবে অথবা (RN E - SELENIUM PLUS)-VITAMIN E+Selenium টা এক ফোটা করে দুই টাকে খাওয়াবেন । এবং প্রতি জোড়া পাখি ও কবুতরকে অন্যান্য খাবারের সাথে এই ঔষধ মিশ্রিত খাবার এক থেকে দুই দিন ১০ গ্ৰাম করে প্রয়োগ করতে হবে।
ভিটামিন ই এর প্রভাবে পাখি বা কবুতরের শরীর গরম হয় এবং এরা ব্রিডিং মুড়ে চলে আসে। ঔষধ খাওয়ার পর থেকে এরা ঘন ঘন ব্রিডিং করতে থাকে। ঔষধ টি খাওয়ানোর ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পাখি ডিম পাড়ে।
কবুতর বিষয়ক কিছু কথা যা না জানলেই নয়

কবুতর বিষয়ক কিছু কথা যা না জানলেই নয়

একভাই একদিন ফোন দিলেন যে তাঁর একজোড়া কবুতর কেনার পর থেকে ডিম দিচ্ছে না। কি করা যায়? আমাদের দেশে অধিকাংশ খামারি আছেন যারা প্রতিনিয়ত আশা করেন কবুতর ডিম বাচ্চা করবে আর করতেই থাকবে। আর সেটা যে কোন মুল্যেয় হোক না কেন! যদি কোন কবুতর ১৫ দিন বা ১ মাস ডিম দিতে দেরি করে তাহলে চিন্তার অন্ত থাকে না। কিন্তু কেউ এততুকু বুঝতে চাই না যে, এই প্রাণীটিরও বিশ্রাম এর প্রয়োজন আছে। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে “ তুই ডুবে মর আমাকে শালুক তুলে দে ” কথায় বলে যে একটা কবুতর ১২ মাসে ১৩ বার ডিম দেয় স্বাভাবিক পরিবেশ ও সুষম খাবার পায় সেই অবস্থায়। কিন্তু খুব কম খামারিই আছেন যে তাদের এই অবস্থা নিশ্চিত করতে পেরেছেন। আপনি যেমন ফসল বুনবেন আর ফলও তেমনি পাবেন। আপনি শুধু গম ভুট্টা খেতে দিয়ে আপনি কখনও ভাল ডিম বাচ্চা আশা করতে পারেননা। কিছু খামারি আছেন যারা কিছু দামি জাতের কবুতর কে দিয়ে নিয়মিত ডিম নেন। আর ফসটার দিয়ে বাচ্চা পালেন। এই ভাবে মাসে ২-৩ বার ডিম নেনে।আর কিছু খামারি আছেন যারা ২ মাদী ও ১ নর দিয়ে ব্রীড করেন ও ডিম নেনে। আর এটা তারা গর্ব ভরে প্রচার করেও বেড়ান। এখন কেউ যদি এই ধরনের ব্রীডার কে কসাই বলে আখ্যায়িত করেন তাহলে কি ভুল বলা হবে?
এই ত সেদিন এক খামারি জানালেন যে তিনি তা একজোড়া কবুতর থেকে ২ লক্ষ টাকা আয় করেছেন কিন্তু মাদিটা ২-৩ মাস ধরে অনিয়মিত ডিম দিচ্ছিল বলে তাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কি ধরনের কথা। এত টাকা আয় করার পরও তাকে বিশ্রাম দিবার প্রয়োজন মনে করেননি এই খামারি। খুবই দুঃখ জনক একটা ব্যাপার। প্রায় খামারি আছেন যারা ব্রিডিং জোড়া কিনতে পছন্দ করেন, যাতে বাসায় নিয়ে যাবার কিছু দিনের মধ্যে ডিম পারে বাচ্চা উঠায়। আর তিনি যদি সেই জোড়া বাসায় নিবার পর ১ মাস ডিম না দেন তাহলে অস্থির হয়ে পরেন। আর বিক্রেতার চোদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে ফেলেন। কিন্তু কেন এরকম হচ্ছে কেও একবার ভাবার চেষ্টা করেন না।
আমরা অনেকে সখ থেকে কবুতর পালা শুরু করি কিন্তু পরে টা নেশা ও এরপর পেশা হিসাবে নেন বা নিতে পারেন কন দোষের কিছু নাই। কিন্তু দোষ হল যে সেই প্রাণীটির দিকে খেয়াল না রাখা। সধারনত নর এর থেকে মাদি কবুতরের জীবন কাল তুলনামূলক ভাবে একটু কম হয়। এর অনেক কারন গুলোর মধ্যে একটা কারন হল ঘন ঘন ডিম পারা ও বাচ্চা তুলা। একটা কবুতরের জন্য ডিম পাড়া ও বাচ্চা তুলাটা এবং সেই বাচ্চা তিলতিল বড় করা যে কি কষ্টের তা যদি কেউ সঠিক ভাবে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারত তাহলে হত তিনি বা তারা ডিম বাচ্চা করা বন্ধ করে দিত। একজন সাধারন মানুষ যদি দিনে ২-৩ বার বমি করে তাহলে তাঁর শারীরিক অবস্থা কি হতে পারে? কিন্তু একটা কবুতর দিনের পর দিন অনবরত বাচ্চা কে এই ভাবে খাওয়াচ্ছে। আমি বলব না যে ডিম বাচ্চা করা বন্ধ করে দিতে কিন্তু এর মাঝে একটু রেস্ট দিতে হবে। যেমন আপনি ২-৩ বার বাচ্চা করেছেন এর পর ১৫ দিন রেস্ট দেন। কিভাবে দিবেন। যেমন নর মাদি কে আলাদা রাখা বা প্লাস্টিক ডিম দিয়ে বসিয়ে রাখা। আর এর মাঝে তাকে সুষম খাদ্য, ভিটামিন ও মিনারেলস সরবরাহ করা। গরমের সময় ডিম বাচ্চা করা সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কারন একটা কবুতরের জন্য শীতের সময়তা একটু চালেজিং । কারন এই সময় টা তে রোগ বালায় বেশি হয়। এ ছাড়াও অন্যান্য অবস্থা চিন্তা করলে বুঝা যায়। যদিও বাংলাদেশের বাইরে থেকে এই দেশের জলবায়ু ও আবহাওয়া কবুতর পালা জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। ইউরোপ সহ বাইরের বিভিন্ন দেশে শীতে একেবারেই ব্রিডিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁর মানে আমি এটা বলছি না যে শীতে একবারেয় ব্রিডিং বন্ধ করে দিতে।এতা বলছি যে যে কন মৌসুমেই ব্রিডিং করেন না কেন একটু দেখে শুনে বুঝে ব্রিডিং করাবেন। এখন আসুন আমরা ডিম ও এর গঠন নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করি।
ডিমঃ
ডিম্ব বা ডিম্বাণু থেকেই প্রাণী জিবনের সৃষ্টি হয়। সাধারণত স্তন্নপায়ী প্রাণীর ভ্রুনের বৃদ্ধি ঘটে জননীর দেহের ভিতর, কিন্তু পাখি বা কবুতর জাতীয় প্রাণীর ভ্রুনের বৃদ্ধি ঘটে দেহের বাইরে তা দেবার মাধ্যমে। আমার কয়েকটি পোস্ট এ ডিম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁর মধ্যে কবুতর কেন ডিম ভাঙ্গে ও খায়, ডিমের নরম খোলস, ও ডিমের ভিতর বাচ্চা মারা যাওয়া ইত্যাদি। আপনি আপানার কবুতর কে যে ধরনের খাবার দিবেন সে ঠিক সেয় ধরনেরি ডিম দিবে। মানে আপনি যদি ভাল বাচ্চা পেতে চান তাহলে অবশ্যই সুষম খাদ্য ও ভাল খাদ্য সার দিতে হবে। আর ডিমের ভিতর বাচ্চা মারা যাওয়া বা বাচ্চা দুরবল হাওয়াই এর অন্যতম কারন হিসাবে ধরা হয়। প্রতিটি ডিম্বাণু ঝিল্লি প্রাথমিক অবস্থায় একটি বোটার সাহায্যে ডিম্বাশয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এরপর পুষ্ট ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেকে বিছিন্ন হয়ে ফ্লানেল এর মধ্যে আসে এবং পরিশেষে বাইরে বেরিয়ে আসে। ডিম পারার ৩০ মিনিট পর্যন্ত ডিমের খলের চারপাশে মোম জাতীয় একটি আবরন পরে। যাকে Cuticle বলে। এটি ডিম নালির ভিতর সঞ্চালনে সাহায্য করে থাকে। ডিম শেল এর সামগ্রিক মান প্রভাবিত করে এমন অনেক কারন আছে। ডিম শেল 97 94 % ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ওপর গঠিত। অন্য তিন শতাংশ জৈবপদার্থ ও ডিম শেল রঙ্গক হয়। শেলে 8,000 হিসেবে আণুবীক্ষণিক ছিদ্র আছে। শেল নিজেই বাইরের আবরণ আচ্ছাদন মত প্রোটিন এর ঠিক পূর্বে শেল জমা হয় যা ত্বকের বাইরের স্তর বা পুষ্প শেল মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া অনুপ্রবেশ থেকে ডিম অভ্যন্তর বিষয়বস্তু রক্ষা নামক শ্লৈষ্মিক আবরণ রয়েছে। ডিম শেল এর গুণ শেল এর রং, আকৃতি, এবং গঠন দ্বারা নির্ধারিত হয়। ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলিত হয়ে ডিমের ভিতর একটি প্রান মণ্ডল তৈরি হয় আর এটা সব সময় কুসুমের উপরের অংশে থাকে। ডিমের কুসুম বাচ্চার দেহের অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। আর এটি ভ্রুনের জন্য প্রতিনের সরবরাহ নিশ্চিত করে। ডিম ধরার সময় আলত করে ধরতে হয় যাতে ঝাকি না লাগে।বা ডিম ৪ দিনের মাথায় যে রক্ত জমে তা জোরে নাড়াচাড়া করলে তা রগ ফেটে ডিম অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। ডিমে যদি কন কারনে ফাটল ধরে আর যদি কন রস বের না হয় তাহলে ডিম জমার ব্যাপারে কন অসুবিধা হয় না তবে ডিম টি পুদিং দিয়ে ভাল করে লেপে শুকিয়ে নিতে হবে। টেপ দিয়া ঠিক না…এতে পরে বাচ্চা বের হতে অসুবিধা হতে পারে। কিছু কবুতর আছে একটা ডিম দিবার পরপরই ডিমে বসে। আর কিছু আছে যে ২ টা ডিম দিবার পরি কেবল ডিমে তা দেয়। কিছু আবার আছে ডিমে একেবারেই বসে না বা কিছুদিন পর ডিম থেকে উঠে যায়। আই ধরনের কবুতরের জন্য ফসটার রাখতে হয়। সাধারণত বড় ধরনের কবুতরের ১ জোড়ার জন্য ৩ জোড়া করে ফসটার রাখা ভাল।
পরিশেষে বলতে চাই যদি আপনি ঠিকমত বাচ্চা আশা করেন তাহলে অবশ্যই রেস্ট এর পাশাপাশি ডিম বাতি পরিস্কার, ডিম পরিস্কার ও ডিমের আদ্রতা নিশ্চিত করতে হবে। আর তায় ৮ দিনের পর থেকে ডিমে ২-৩ দিন অন্তর পানি স্প্রে করা ও কবুতরের গোসল নিশ্চিত করতে হবে। এতে ডিমের হ্যাচিং এর সম্ভাবনা বেরে যায়। আর আপনি যদি সোনার ডিম পাড়া হাঁসের গল্পের মত সুধুই ডিম চান তাহলে কোন কথা নাই। আপনি হয়ত বেস কয়বার ডিম বাচ্চা করতে পারবেন, কিন্তু আদুর ভবিষ্যৎ এ একটি সুন্দর সম্ভাবনা কে নষ্ট করার জন্য আপনিই দায়ি থাকবেন।
কবুতরের সাস্থ কথাhttps://mobile.facebook.com/?ref=opera_speed_dial&_rdc=1&_rdr   
---------------------------
১৬. পাখির জন্য
গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রাকৃতিক খাবার ও উপকারিতাঃ
১) তুলসী পাতা : ঠান্ডা, কাশি, শ্বাস কস্ট, ফুসফুসের সমস্যা দূর করে, জ্বরনাশক, ভিটামিন কে এর উৎস।
প্রচণ্ড শীতে ঠান্ডা জনিত সমস্যা প্রতিরোধে সপ্তাহে একদিন দিতে পারেন। এক লিটার পানির সাথে ৫-১০মিলি পাতার রস।
২) এলভেড়া : গরমে দুর্বলতা কমায়, কিডনি ফুসফুস ভাল থাকে, পালক গজায়, পেটের সমস্যা দূর করে, বাচ্চার লোম ছেঁড়া বন্ধ হয়, কাঁটা ছেঁড়া পোড়া ক্ষত ভাল হয়, ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী।
সারাবছর নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন, সপ্তাহে একদিন করে। এক লিটার পানির সাথে ১০-১৫মিলি এলভেড়া রস।
৩) পুদিনা পাতা : পেটের সমস্যা ও আমাশয় দূর করে, রুচি বর্ধক ও ঠান্ডা ভাব দূর করে, শক্তিবর্ধক।
৫-১০মিলি রস এক লিটার পানির সাথে মিশিয়ে মাসে এক-দুইদিন।
৪) থানকুনি পাতা : পেটের সমস্যা ও আমাশয় দূর করে, রক্ত পড়া বন্ধ করে, বায়ু নাশক, প্রশান্তি দান করে।
৫-১০মিলি রস এক লিটার পানির সাথে মিশিয়ে মাসে এক-দুইদিন।
৫) নিম পাতা : কৃমি নাশক, শক্তিশালী জীবাণুনাশক, মাইট ধ্বংস হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, পরিবেশের বাতাস পরিষ্কার করে। বেশি খাওয়ানো যাবেনা।
কৃমি হলে নিমের দ্রবন - প্রতি মাসে টানা ৩ দিন (দিনের বেলায় নিমের দ্রবণ,বিকাল বেলায় সাধারণ খাবারের পানি) ২০/২৫ টি নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে ৫০০ মিলি পরিমাণ ফুটন্ত গরম পানিতে ছেড়ে দিন। এর পরে পাত্রটি ঢাকনি দিয়ে ঢেকে ১৫-২০ মিনিট ধরে হালকা আঁচে সিদ্ধ করুন। পানির রঙ গাঢ় বাদামী হলে পাত্রটি চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা হতে দিন তারপর কবুতরের পানির পাএে দিবেন।
৬) আদা : কফ পরিষ্কার করে, হজমকারক, বায়ুনাশক, বমিভাব দূর করে, দীর্ঘ মেয়াদী ব্যথা দূর করে।
এক লিটার পানিতে এক-দুই চামচ আদা বাটা মিশিয়ে সেই পানি ছেকে খাওয়াতে পারেন সপ্তাহে একদিন।
৭) রসুন : জ্বর নাশক, ঠান্ডা ভাব দূর করে, এগ বাইন্ডিং প্রতিরোধক। আস্ত রেখে দিলে পোকা মাকড় আসে না। বেশি খাওয়ানো যাবেনা।
দুই লিটার পানিতে এক চামচ রসুন বাটা মিশিয়ে সেই পানি ছেকে খাওয়াতে পারেন মাসে এক-দুই দিন।
৮) হলুদ : বায়ুনাশক, ব্যথা নাশক, রক্ত পড়া বন্ধ করে, ক্ষত নাশক, ভাঙ্গা অঙ্গ জোড়া দিতে বিশেষ সাহায্যকারী।
এক লিটার পানিতে এক চামচ হলুদ বাটা মিশিয়ে সেই পানি ছেকে খাওয়াতে পারেন মাসে এক-দুই দিন।
৯) পেয়ারা ও পেয়ারা পাতা : এন্টি অক্সিডেন্ট, পালক গজায়, প্রচুর ভিটামিন সি এর উৎস।
৫-১০মিলি রস এক লিটার পানির সাথে মিশি